করোনা পরিস্থিতি ও সরকারি উদ্যোগ প্রসঙ্গে
– কৃষিবিদ হামিদুর রহমান, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ নেটওয়ার্ক।
করোনাঘটিত মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে বিশ্বজুড়ে। এই লড়াই মানুষের বাঁচার লড়াই, মানবসভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কোভিড-১৯ নামের করোনা ভাইরাস মাত্র চার মাসে পৃথিবী নামের গ্রহের চেহারাটাই পালটে দিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ২১২ টিরও বেশি দেশ। করোনার আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষায় মানুষ নিজ গৃহে অন্তরীণ জীবনযাপন করছে। দেশে দেশে চলছে লকডাউন। মানব সভ্যতার কতকিছুই না পরিত্যাক্ত এখন। চেষ্টার কমতি নেই তবুও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি।
এই করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব জুড়ে অনিবার্য হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক মহামন্দা। বিশ্ব কৃষি ও খাদ্য সংস্থা ইতোমধ্যেই আশংকা প্রকাশ করেছে এ মহামন্দার কবলে পড়ে বেকার হবে কোটি কোটি মানুষ, ক্রয় ক্ষমতা হারাবে তারা। মারাত্বকভাবে ব্যহত হবে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা- যার অনিবার্য পরিণতি দুর্ভিক্ষ।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে সেই সতর্কবানীই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মাবলী সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সাথে মেনেচলার পাশাপাশি কৃষি তথা খাদ্য উৎপাদনে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করার তাগিদ দিচ্ছেন। তাগিদ দিচ্ছেন প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে পুষ্টিকর খাদ্য শস্য উৎপাদনের।
আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত যা- আমরা দানাজাতীয় ফসল ধান থেকে পাই। বাংলাদেশে তিন মৌসুমে আউশ, আমন ও বোরো ধানের চাষ হলেও মোট উৎপাদিত ধানের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগের যোগান আসে বোরো মৌসুম থেকে। এই বছর বোরো মৌসুমে দুই কোটি মেট্রিক টনের অধিক ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা রয়েছে। এখন পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া ও সুষম সার ব্যবহারের ফলে কম রোগবালাই ও দানা পুষ্ট হওয়ার লক্ষণসমূহ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অতিক্রমের ইঙ্গিত দিচ্ছে।এই বোরো ধান উৎপাদনের এক গুরুত্বপুর্ণ এলাকা হলো দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের হাওড় অধ্যুষিত জেলাগুলি। ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে অবস্থিত ৭ টি জেলার প্রায় পাঁচ লক্ষ হেক্টর জমি হাওড় অধ্যুষিত। এসব জেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে বেশী জমিতে বোরো ধান উৎপন্ন হয়ে থাকে। হাওড়ে প্রধানত ব্রিধান-২৮ ও ব্রিধান-২৯ নামের দু’টি জনপ্রিয় জাতের চাষ হয়ে থাকে। এ দু’টি জাতের মধ্যে ব্রিধান-২৯ এর ফলন বেশী এবং জীবনকালও ব্রিধান-২৮ এর চেয়ে প্রায় ২০ দিন দীর্ঘ। দেশের সমতল এলাকার তুলনায় হাওড়ে আগে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ধান রোপণ সম্পন্ন করা হয়। হাওড়ের নিম্নাঞ্চলে আরো আগে অর্থাৎ নভেম্বর মাসের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে ধান রোপণ করা হয় যাতে মধ্য এপ্রিলের আগাম বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে ধান ঘরে তোলা যায়। সচারাচর দেখা যায় যে এপ্রিলের মাঝামাঝির পর থেকে সিলেট অঞ্চলে আগাম বৃষ্টি এবং হাওড়ের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসাম প্রদেশে লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হাওড় এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। তলিয়ে যায় কৃষক ভাইদের বাঁচার অবলম্বন। হাহাকার পড়ে যায় একফসলী জমির হাওড় অঞ্চলে। এ বছরেও সে আশংকার পূর্বাভাস দেয়া হয়। এপ্রিল মাসের ১৮ থেকে ২০ তারিখ এবং ২৫ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পুর্বাভাসে চিন্তিত হয়ে পড়েন হাওড়ের কৃষক ভাইয়েরা। এর সাথে যুক্ত হয় করোনাজনিত লকডাউন, গণপরিবহন বন্ধ থাকা এবং স্বাস্থ্যঝুকির কারনে উত্তরাঞ্চল থেকে কৃষি শ্রমিক ধান কাটতে হাওড়ে আসতে পারবে কি না সেই উৎকণ্ঠা। সবমিলিয়ে হাওড়ের ধান কাটা নিয়ে এক উদ্বেগজনক অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে তা সামাল দিতে আগেভাগেই সক্রিয় হন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি তার মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে প্রস্তুত করেন পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় সম্পাদনে। সমাধানের পথ একটাই – আকস্মিক বন্যা এড়িয়ে ক্ষেতে শতকরা ৮০ ভাগ ধান পরিপক্ক হলেই ধান কেটে ফেলতে হবে। এ কাজে প্রয়োজন পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক ও কর্তনযন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ২০০ কোটি টাকা থেকে হাওড়ের হিস্যা অনুযায়ী প্রাপ্য কর্তনযন্ত্র কিনে দ্রুত হাওড়ে পাঠানোর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়। সেই সাথে গুরুত্ব দেয়া হয় জেলার অভ্যন্তরের সাময়িক বেকার, কৃষক পরিবারের সদস্য, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি উৎস থেকে কৃষি শ্রমিক সংগ্রহ এবং উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, লালমিনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং জামালপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে স্বাস্থ্যসুরক্ষার নিয়মনীতি মেনে হাওড়ে শ্রমিকের যোগান দেয়ার।
এসব জেলার প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্যবিভাগ এমনকি জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করে হাওড়ে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেন কৃষিমন্ত্রী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অঞ্চল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা এমনকি মাঠপর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও এ কাজে এগিয়ে আসেন। সূচিত হয় সহযোগিতামূলক কর্মধারার এক নতুন দিগন্ত। কৃষিমন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাক অত্যন্ত দায়ীত্বশীলতা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে এ কাজে নেতৃত্ব দেন। অত্যন্ত দ্রুততার সাথে লকডাউনের মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভর্তুকির আওতায় কম্বাইন হার্ভেস্টার ও রিপার কিনে হাওড়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ফলে হাওড়ে সক্রিয় পুরাতন কর্তন যন্ত্রগুলির সাথে চারশতাধিক নতুন যন্ত্র সংযুক্ত হয়। লকডাউনের মধ্যে এসব কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করা মোটেই সহজ ছিলনা। কিন্তু তা সম্ভব হয় কৃষিমন্ত্রী ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের দায়ীত্বশীল পদক্ষেপের ফলে। এসব ধানকাটা যন্ত্র শতকরা ৭০ ভাগ ভর্তুকীমূল্যে হাওড়ের কৃষক ভাইদের দেয়া হয়। অন্যদিকে হাওড়ে ধান কাটতে নিয়োজিত কৃষি শ্রমিকদের মাঝে স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপকরণাদি বিতরণ, বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য থাকার জায়গা, খাওয়ার জন্য ত্রাণের চাইল সরবারহ ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে।
এসব কার্যক্রম গ্রহণ করার ফলে হাওড়ের কৃষক ভাইদের দুঃশ্চিন্তা দূর হয়। সৃষ্টি হয় উৎসাহ উদ্দীপনার। যা উৎসব মূখর পরিবেশে ধান কাটতে হাওড়ের কৃষক ভাইদের উৎসাহিত করে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এইসব উদ্যোগের কথা গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে তা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে, একধরনের স্বস্তি ফিরে আসে।
প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মেনে কৃষিমন্ত্রী তার মন্ত্রনালয়ের সকল সংস্থার কর্মীদের মাঠপর্যায়ে সক্রিয় রেখেছেন। কৃষি উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে মাঠের ফসল সমূহ সুরক্ষা ও সংগ্রহ নিশ্চিত করা এবং পরবর্তি আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে শস্য উৎপাদন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন পদক্ষেপ রচনায় তিনি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। দেশের খাদ্য পরিস্থিতির উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে সেই বিষয়ে দায়বদ্ধ থেকে একজন দেশপ্রেমিক ও জনবান্ধব মুক্তিযোদ্ধার মনোবল নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করাকে ব্রত হিসেবে নিয়েছেন কৃষিবিদ ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। মাঠ পর্যায়ে তার দিকনির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা এবং মাঠ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে কোন অসঙ্গতি থাকছে কিনা তা তিনি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতেও কুন্ঠিত নন।
দৃষ্টান্তস্বরূপ লক্ষণীয় যে, করোনা পরিস্থিতির স্বাস্থ্যঝুকি সত্ত্বেও তিনি গত ২১ এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওড়ে গিয়ে ভর্তুকীর মাধ্যমে প্রদত্ত ধানকাটা যন্ত্র কম্বাইন হার্ভেস্টার কৃষকভাইদের মাঝে বিতরণ করেছেন, ত্রাণ দিয়ে উৎসাহিত করেছেন কৃষি শ্রমিক ভাইদের। অনুপ্রাণিত করেছেন নিজ মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের। এদিন তাঁর সাথে মাননীয় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জনাব আশরাফ আলী খসরু, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কৃষক ভাইদের পাশে উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রীর এ উদ্যোগ গণমাধ্যমে বিপুলভাবে প্রচারিত ও প্রশংসিত হয়। প্রখ্যাত প্রবীন সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী সম্প্রতি জনকন্ঠ পত্রিকায় লেখা এক উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে কৃষিমন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাকের এ কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কৃষিমন্ত্রী ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক গত ২৭ এপ্রিল নিজ অফিস থেকে ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে দেশের কৃষি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণের সাথে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা মতবিনিময় করেন। এ মতবিনিময়ের প্রধান উদ্দ্যেশ্য ছিল করোনাকালীন কৃষি উন্নয়নের কর্মকৌশল ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা। এ আলোচনায় প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করে তিনি তাঁর মন্ত্রণালয়ের আগামী দিনের বিশেষ বিশেষ করণিয়গুলি চিহ্নিত করতে সচেষ্ট হন। এ উদ্যোগেরও মূল লক্ষ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসরণে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
হাওড় অঞ্চলের অপর প্রান্ত ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা সুনামগঞ্জ জেলা। সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর ১ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টরেরও অধিক জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ জেলায় রয়েছে ছোট বড় ৩ শতাধিক হাওড়। অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ঘটিত আকস্মিক বন্যায় এ জেলার হাওড়গুলো আগে নিমজ্জিত হয়। এই আকস্মিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে হাওড় থেকে ধান ঘরে তোলা এ জেলার জন্য সবসময়ই বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি মিডিয়াতে এ জেলার ধান কর্তন ও বন্যা সম্ভাবনা নিয়ে নানান খবর পরিবেশিত হতে থাকে। বিষয়টি কৃষিমন্ত্রীকে উদ্বিগ্ন করে। এ জেলায় কতটা ধান কাটা যন্ত্র সরবারহ করা হয়েছে? এসব যন্ত্র কতটা সফলতার সাথে কাজ করছে? কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি পূরণে গৃহীত ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হচ্ছে? এসব বিষয় সরেজমিনে দেখার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে গত ২৯ এপ্রিল ভোরে ঢাকা থেকে গাড়িযোগে রওনা দিয়ে সকাল ১০টার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাংহাই হাওড়ে পৌছান। এ পরিদর্শনে তার সঙ্গী হোন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। আরো যোগ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তিনি সাঙ্গহাই হাওড়ের দুইজন কৃষক ভাইয়ের হাতে ৭০% ভর্তুকীমূল্যে ২ টি কম্বাইন হার্ভেস্টারের চাবি তুলে দেন। কম্বাইন হার্ভেস্টার হস্তান্তর এবং হার্ভেস্টার দিয়ে ধান কর্তন ও একই সাথে মাড়াই ঝাড়াই হয়ে পরিস্কার ধান মেশিন থেকে বের হওয়ার দৃশ্য দেখে গ্রামবাসীরা বিস্মিত ও মুগ্ধ হন। এ মেশিন ব্যবহারে কেবল ধান কাটার খরচই কমছে না, কাটাধান মাড়াই এর জায়গায় বয়ে আনার খরচ এবং মাড়াই ঝাড়াই করার খরচও লাগছে না। এমন যন্ত্র পেয়ে কৃষকদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। ধান কাটার স্থানটি উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কৃষিমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী যখন মেঘালয় সীমান্তবর্তী শনির হাওড়ে কম্বাইন হার্ভেস্টার হস্তান্তর করতে ও ধান কর্তন অগ্রগতি দেখতে যান।
বেশিরভাগ গণমাধ্যম কৃষিমন্ত্রীর সুনামগঞ্জের কৃষক ভাইদের পাশে দাঁড়ানোর ঘটনাকে অত্যন্ত উৎসাহ ব্যঞ্জক দায়িত্বশীল উদ্যোগ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
কৃষিমন্ত্রী ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যৌবনে একাত্তর সালে তিনি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন পরাধীনতার কবল থেকে দেশ মাতৃকার মুক্তির মুক্তির জন্য। এখন তিনি পরিণত বয়সে যুদ্ধে অবতীর্ন হয়েছেন করোনার মহামারী থাবা থেকে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে মুক্ত রাখার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে আশংকিত দুর্ভিক্ষের করালগ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর এবারের যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। ডঃ আব্দুর রাজ্জাক লড়ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায়। আমরা প্রত্যাশা করি কৃষি মন্ত্রীর উদ্যোগগুলো ফলপ্রসূ হবে। জিতবে কৃষক, হাসবে বাংলাদেশ।